LIS Links

First and Largest Academic Social Network of LIS Professionals in India

Members

News paper report on Collage library & it's services in WB

ANANDA BAZAR PATRIKA

২৪ পৌষ ১৪২০ বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারি ২০১৪

ভোটে দিন ফেরে না কলেজ গ্রন্থাগারের

অভিষেক চট্টোপাধ্যায় • কলকাতা

প্রায় এক বছর পরে কলেজ-কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে চলেছে। রাজনৈতিক তরজায় ক্যাম্পাস সরগরম। কিন্তু কলেজ গ্রন্থাগারের মতো জরুরি বিষয় কার্যত উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।
কী অবস্থা গ্রন্থাগারগুলির?
গাঁ-গঞ্জের অধিকাংশ কলেজ গ্রন্থাগারেই কোনও গ্রন্থাগারিক নেই। চুক্তিভিক্তিক কর্মী সামলান। বেশির ভাগ গ্রন্থাগারে ইন্টারনেট সংযোগ নেই। বই বাছার জন্য ঠিকঠাক ক্যাটালগও মেলে না। কোথাও আবার রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দুষ্প্রাপ্য বই। আবার, হুগলির সিঙ্গুর মহাবিদ্যালয়ের মতো নতুন কলেজে এখনও গ্রন্থাগারই তৈরি হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ লাইব্রেরিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ করের দাবি, বর্তমানে গ্রামের প্রায় ৭৫% কলেজেই স্থায়ী গ্রন্থাগারিক নেই। বেশির ভাগ কলেজ গ্রন্থাগারর পরিকাঠামো খারাপ। তাঁর খেদ, “শুধু গ্রাম-গঞ্জ নয়, শহরের কলেজগুলিতেও একইধরনের সমস্যা।”
কলেজ গ্রন্থাগারের জন্য অনুদানের অভাব নেই। কিন্তু সঠিক শুধুমাত্র পরিকল্পনার অভাবে অনুদানের টাকা নষ্ট হচ্ছে বলে গ্রন্থাগারিক সংগঠনের অভিযোগ।
গত বছর অগস্টে ইউজিসি-র অনুদানে পূর্ব মেদিনীপুরে বাজকুল মিলনী মহাবিদ্যালয়ের হলে দু’দিন ধরে ‘বাংলার কলেজ লাইব্রেরির সমস্যা ও সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা হয়েছিল। রাজ্যের বিভিন্ন কলেজের গ্রন্থাগারিকেরা তাতে যোগ দেন। কী করে কলেজ গ্রন্থাগার উন্নত করা যায়, সেই বিষয়ে নিজেদের লিখিত মতামতও পেশ করেন। তাতে নানা দিক উঠে এসেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র সংগঠনগুলির খামতি যেমন আছে, তেমনই ছাত্রছাত্রীদের অসচেতনতার প্রসঙ্গও উঠেছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর মহাবিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক স্বপনকুমার শাসমলের অভিজ্ঞতা হল, গ্রামের কলেজগুলিতে যাঁরা পড়তে আসেন, তাঁদের অনেকেই প্রাথমিক ভাবে গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে জানেন না। অনেকে আবার সঙ্কোচ বোধ করেন। তাঁদের হাতে ধরে বই খোঁজা শেখানো দরকার। কিন্তু উপযুক্ত কর্মী ও পরিকাঠামোর অভাবে সেটা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। আধুনিক প্রযুক্তির অভাব তো আছেই।
কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখাই ছাত্র সংসদের কাজ। গ্রন্থাগারের বিষয়ে তাদের ভূমিকা কী? স্বপনবাবুর মতে, “ছাত্র সংসদ মাঝে-মধ্যে গ্রন্থাগারে বই বাড়ানোর দাবি জানায়। কিন্তু ভাল কলেজ গ্রন্থাগার করার জন্য ছাত্র সংসদ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সমন্বয় জরুরি।” হুগলির তারকেশ্বরের একটি কলেজের এক বাংলা শিক্ষিকার আক্ষেপ, “আমাদের সময়ে ছাত্রনেতারা নিজেরা কলেজ গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করতেন। এখন নেতা দূরের কথা, সাধারণ পড়ুয়ারাই গ্রন্থাগারে কম যায়। ফলে আমাদের গ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই থাকলেও তার সঠিক ব্যবহার হয় না।”
গত বছর হাওড়ার প্রভু জগদ্বন্ধু কলেজ ‘সেরা গ্রন্থাগার ব্যবহারকারী ছাত্র’ হিসেবে সংবর্ধিত হয়েছিলেন তদানীন্তন তৃতীয় বর্ষের সঞ্জয় নাথ। তিনি আবার তুলছেন অন্য সমস্যার কথা। তাঁর অনুযোগ, “কলেজের গ্রন্থাগারে বই পেতে সমস্যা না হলেও সেখানে বসে পড়াশোনা করা দুষ্কর। কেননা বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী ওখানে বসে গল্প করে। এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র সংসদের দেখা দরকার।”
কী বলছেন ছাত্রনেতারা?
ডায়মন্ড হারবারের ফকির চাঁদ কলেজের প্রাক্তন ছাত্র নেতা, বর্তমানে এসএফআইয়ের রাজ্য কমিটির সদস্য সফিকুর রহমানের বক্তব্য, “সাধারণত গ্রামের কলেজ গ্রন্থাগারের ঘরগুলি ছোট হয়। আমাদের কলেজে আমরা আন্দোলন করে গ্রন্থাগারে কলা ও বিজ্ঞান বিভাগ আলাদা করেছিলাম। এখন তো আমাদের কলেজে ঢুকতেই দেওয়া হয় না, কী আর করব?”
টিএমসিপি-র রাজ্য সম্পাদক (বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক), উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা অম্লান মণ্ডল কলেজ গ্রন্থাগারগুলির দুর্দশার কথা মেনে নিয়েছেন। তাঁর দাবি, গ্রন্থাগারগুলির উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবিদাওয়া জানানো হয়েছে। রাজ্যে পরিবর্তনের সৌজন্যে এখন বেশির ভাগ কলেজে অম্লানদের সংগঠনেরই দাপট। কলেজ গ্রন্থাগারের হাল আগেও যা ছিল, এখনও তা-ই। তার পরিবর্তন কবে হবে?

 

Views: 248

Reply to This

© 2024   Created by Dr. Badan Barman.   Powered by

Badges  |  Report an Issue  |  Terms of Service

Koha Workshop